বর্গভীমা মন্দিরগল্প ও ইতিহাস
বর্গভীমা মন্দির
গল্প ও ইতিহাস
এই মন্দিরটি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক (প্রাচীন তাম্রলিপ্ত)-এ অবস্থিত। নিচে গল্প সংক্ষেপে বাংলা ভাষায় দেওয়া হলো:
---
পুরাণিক কাহিনী
পৌরাণিক মতে, দেবী দেবী বর্গভীমা হলেন সতী-র একটি অবিচ্ছিন্ন অংশের (বাম পায়ের গোড়ালি) স্থান, অর্থাৎ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নাচরত শিব-র হাত থেকে বিচ্ছেদ হলে সতীর বাম পায়ের গোড়ালি এই স্থানে পড়েছিল।
অন্য এক কিংবদন্তিতে, ময়ূরবংশীয় রাজার (রাজা তাম্রধ্বজ) সময়ে একটি ধীবরপত্নীর গল্প রয়েছে। ধীবরপত্নী প্রতিদিন রাজাকে শোল মাছ এনে দিতেন। একদিন মাছ মরা হয়ে যায়, তখন তিনি একটি জঙ্গলের কুণ্ড থেকে জল ছিটিয়ে মাছকে আবার জীবিত করে রাজার কাছে হাজির হন। রাজার উৎসুক হয়ে গিয়ে মন্দিরের মূর্তি দেখতে পান এবং ওই স্থানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
স্থাপত্য ও ধর্মীয় গুরুত্ব
মন্দিরটি প্রাচীন হলেও বর্তমান নির্মাণ সম্ভবত মধ্যযুগে করা হয়েছে।
এটি এক ‘শক্তিপীঠ’ হিসেবে গণ্য – বাংলাদেশের ও ভারতের প্রত্ন ও ধর্মীয় রূপে বলা হয় ৫১ টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি।
মন্দিরের ভোগ-প্রথায় রয়েছে একটি বিশেষ বিষয়: এখানে প্রতিদিন দেবীকে শোল মাছ (মাছ ‘শোল’) দেওয়া হয়।
---
কেন দেখতে যেতে হবে
ইতিহাস ও পুরাণ দুই মিলিয়ে রয়েছে — তাই যারা ধ্রুপদী ভারতীয় ধর্ম, পুরাণ, মন্দির স্থাপত্য ইত্যাদিতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য।
তমলুক শহরের প্রাণকেন্দ্রেই অবস্থিত হওয়ায় সময় কম লাগিয়ে দর্শন করা যায়।
বিশেষ উৎসব, যেমন কালীপূজা বা দুর্গাপূজা-র সময় মন্দিরটি অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয় — ভক্তদের ভিড় বড় হয়।
---
ঠিক কোথায়: তমলুক শহরে, রূপনগরায় নদীর ধারে।
মন্দির ও মূর্তি সম্পর্কে: দেবী বর্গভীমার মূর্তি একটু গোপন থাকে, আর প্রতিদিন ভোরে সাজানো হয়।
মন্দিরের স্থাপত্য ধরণ: ওড়িশা (কালীঙ্গ) শৈলীর ও বাংলা ‘আট্টছড়া’ (আটছাড়া) ধাঁচের মিশ্র রূপ রয়েছে।
Comments
Post a Comment